রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:০২ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেক্স: ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় রুমা বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ রাস্তায় ফেলে তার স্বামী পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের পাতরাইল দক্ষিণ দিঘিরপাড় এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
মৃত গৃহবধূর নাম রুমা বেগম। মাদারীপুরের রাজৈর উত্তর চাঁনপুট্টি গ্রামের প্রয়াত কুদ্দুস মাতুব্বরের মেয়ে।
অভিযুক্ত স্বামীর নাম মো. টোকন মাতুব্বর। উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের পাতরাইল দিঘিরপাড় গ্রামের বাসিন্দা তিনি। তাকে খুঁজছে পুলিশ।
মৃত রুমার পরিবারের সদস্যরা জানান, শনিবার সকালে টোকন মাতুব্বরের এক ভাগনে হৃদয় মিয়া মোবাইল ফোনে তাদের জানায়, ‘রুমা আত্মহত্যা করেছে। তার মরদেহ এসে নিয়ে যান।
এটা শোনার পর থেকে রুমার স্বামী টোকনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার করেন তারা। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বাড্ডায় রুমার ভাড়া বাসায় খোঁজ নেন তারা। কিন্তু সেখানেও রুমা ও তার স্বামী-সন্তানদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
তারা জানান, দুপুরের পর অপরিচিত একটি নম্বর থেকে রুমার মামা বাবুলকে একটি কণ্ঠস্বর বলেন, ‘রুমার লাশ এখন ভাঙ্গায় আছে। তাকে রাস্তার ওপরে রাখা হয়েছে সেখানে গিয়ে লাশ বাড়িতে নিয়ে যান।
এ তথ্য পেয়েই ভাঙ্গায় রুমার শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয় তারা। এক সময় পথে তারা দেখেন, একটি ব্রিজের ওপর স্টিলের খাটে চাদর দিয়ে ঢাকা রয়েছে রুমার লাশ। সেখানে রুমার লাশটি একাই পড়েছিল। পরে রুমার শ্বশুরবাড়িতে যান তারা। কিন্তু বাড়িতেও তারা কাউকে খুঁজে পায়নি। এরপর থানা পুলিশকে জানান তারা। ঘটনাস্থলে পৌঁছে সন্ধ্যায় মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
পরে রবিবার (২৭ আগস্ট) ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ফরিদপুরের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
রুমার মা ও ছোট বোন অভিযোগ করে বলেন, রুমা তার স্বামী ও তিন ছেলে-মেয়ে নিয়ে ঢাকার বাড্ডায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। সেখানে গত এক বছর আগে টোকন কাউকে না জানিয়ে ঢাকায় আরেকটি বিয়ে করে। কয়েকদিন পর ওই নারীকে ডিভোর্স দেয় টোকন। কিন্তু সম্প্রতি সেই নারীর সঙ্গে টোকনের গোপনে যোগাযোগ চলছিল। এই নিয়ে রুমার সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো টোকনের এবং টাকা-পয়সা চেয়েও রুমাকে নির্যাতন করতেন টোকন।
রুমার মামা বাবুল হোসেন জানায়, মরদেহ দেখে বুঝেছি আমার ভাগনির বাম হাত ও পা ভাঙা ছিল। মুখে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখেছি। তাকে পরিকল্পিত ও নির্মমভাবে হত্যা করেছে ওর স্বামী টোকন। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই আমরা।
এ বিষয়ে ভাঙা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়ারুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে তিনিসহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) তালাত মাহমুদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে সন্ধ্যার পর মরদেহ থানায় নিয়ে আসেন তারা। ময়নাতদন্তের জন্য রোববার সকালে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।